রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নৌকায় হেলিকপ্টার থেকে গুলি

আশ্রয়প্রার্থী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিজিবি-কোস্টগার্ড মিয়ানমারের জলসীমায় ঠেলে দেয়ার পর (পুশব্যাক) হেলিকপ্টার থেকে তাদের নৌকায় গুলি চালানো হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সাংবাদিকদের বরাতে বৃহস্পতিবার ‘রেডিও ফ্রি এশিয়া’ এ খবর দেয়ার পর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে শুক্রবার।
আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় তহবিল ও সমর্থনে পরিচালিত রেডিও ফ্রি এশিয়া জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও সংখ্যাগুরু রাখাইনদের যৌথ সহিংসতার শিকার হয়ে মিয়ানামরের আরাকান প্রদেশের (রাখাইন) রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুরা অজস্র নৌকায় করে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন উপকূলে আশ্রয় নেয়। এদের মধ্যে ছয়টি নৌকার মধ্যে শেষ পর্যন্ত বেঁচে যাওয়া তিনটি নৌকা আরোহী রোহিঙ্গারা ছয় বারের চেষ্টায় বাংলাদেশী সীমান্তরক্ষীদের এড়িয়ে স্থানীয় বাংলাদেশীদের কাছে পৌঁছে আশ্রয় পান গত বৃহস্পতিবার।

এর আগে বাংলাদেশে ঢুকতে পাঁচবারের ব্যর্থ চেষ্টার মাঝখানের সময়ে তারা নাফ নদী ও বঙ্গোপসগার মোহনায় অসহায়ভাবে ভেসে ছিলেন চারদিন। তারই মধ্যে একদিন একটি হেলিকপ্টার থেকে তাদের নৌকা বহরে গুলি চালানো হয়। তাতে তাদের তিনটি নৌকায় আগুন ধরে ডুবে যায় এবং আরোহীরা মারা যান। তবে তারা বলছেন যে, তারা বাংলাদেশ বা মিয়ানমারের হেলিকপ্টার বলে কিছু শনাক্ত করতে পারছেন না।

রেডিও ফ্রি এশিয়ার সঙ্গে আলাপে ওই বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের কয়েকজন বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। দশ বছর বয়সী কন্যাশিশু মিনার বেগম এখনো ভুলতে পারছেন না ওই চারদিনের কষ্ট ও তাদের সহযাত্রী তিনটি নৌকা আরোহীর মর্মান্তিক মৃত্যুর কথা। একই ধরনের অনুভূতির কথা জানালেন তরুণ মোহাম্মদ ইসলাম। আকিয়াব (সিতউয়ি) থেকে আসা ইসলাম জানালেন, “জ্বলন্ত বাড়ি ও মসজিদ পেছনে ফেলে আমরা এসেছি এখানে। আকিয়াবে আমার দুই সন্তান ও পঁচিশজন আত্মীয় নিহত হয়েছে।”

তিনি জানান, “প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম এটা বুঝি আমাদের বহরের পেছনে পড়ে যাওয়া নৌকার ইঞ্জিনের শব্দই। কিন্তু পরে ওপরে হেলিকপ্টার দেখতে পেলাম এবং নৌকাগুলো আগুন লেগে ডুবে গেল।”

মিনারা ও ইসলামসহ আরো চারজন ভুক্তভোগী তাদের করুণ অভিজ্ঞতার কথা জানান রেডিও ফ্রি এশিয়াকে।

প্রসঙ্গত, চলমান সহিংসতার শিকার হয়ে এখন পর্যন্ত আসতে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে অস্বীকার করে আসছে বাংলাদেশ সরকার। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সম্প্রতি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ‘ধর্ষক’ ও ‘সন্ত্রাসী’ বলে আখ্যা করেছেন।

অন্যদিকে, সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ওপর কোনো ধরনের চাপ সৃষ্টি না করে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের ওপর শরণার্থী গ্রহণে চাপ দেয়ার ওপরই মনোযোগ বহাল রেখেছে বলে দেখা যাচ্ছে।
Share on Google Plus

প্রতিবেদনটি পোষ্ট করেছেন: Unknown

a Bengali Online News Magazine by Selected News Article Combination.... একটি বাংলা নিউজ আর্টিকেলের আর্কাইভ তৈরীর চেষ্টায় আমাদের এই প্রচেষ্টা। বাছাইকৃত বাংলা নিউজ আর্টিকেলের সমন্বয়ে একটি অনলাইন নিউজ ম্যাগাজিন বা আর্কাইভ তৈরীর জন্য এই নিউজ ব্লগ। এর নিউজ বা আর্টিকেল অনলাইন Sources থেকে সংগ্রহকরে Google Blogger এর Blogspotএ জমা করা একটি সামগ্রিক সংগ্রহশালা বা আর্কাইভ। এটি অনলাইন Sources এর উপর নির্ভরশীল।
    Blogger Comment
    Facebook Comment