শীতল পাটি তৈরি করে সংসার চালান রামুর ছেনুয়ারা বেগম

কাজ পাগল গৃহবধূ ছেনুয়ারা বেগম। শীতল পাটি তৈরি করে ধরে রেখেছেন সংসারের হাল।
পাটি বিক্রির টাকায় চলে তিন সন্তানের লেখাপড়া আর সংসারের ভরণ পোষণ।

এছাড়াও হাঁস-মুরগি, ছাগল পালন, ঘরের চালে শিমসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করেন ছেনুয়ারা বেগম। এসব কাজের মাঝে অবসর পেলে স্থানীয় লোকজনের পানের বরজেও কাজ করেন তিনি। এতে বাড়তি আয় জুটে তার। জীবিকার তাগিদেই এমন সংগ্রামী জীবন কাটাচ্ছে ছেনুয়ারা বেগম। ছেনুয়ারা বেগম কক্সবাজারের রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের মনিরঝিল পশ্চিমপাড়ার দিনমজুর মুফিজুর রহমানের স্ত্রী।
প্রায় ১৩ বছর আগে ছেনুঅয়ারা বেগমের বিয়ে হয়। এর পর থেকেই পাটি তৈরির করে আসছেন তিনি। তার তৈরি পাটি বিক্রির অর্থই বর্তমানে এ সংসারের জীবিকার প্রধান উত্স।
ছেনুয়ারা বেগম জানান, ১২-১৩ বছর ধরে তিনি পাটি তৈরির কাজ করে আসছেন। পাটি বিক্রির টাকায় তিনি সংসারের অধিকাংশ ব্যয় নির্বাহ করেন। তিনি আরও জানান, তিনি শীতল ও বুকার এ দু’ধরনের পাটি তৈরি করেন। বড় আকারের একটি শীতল পাটি তৈরি করতে সময় লাগে ১০ থেকে ১২ দিন। আর তা বিক্রি হয় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। ছোট আকারের শীতল পাটি তৈরিতে সময় অনেক কম লাগে। বিক্রি হয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। বড় সাইজের বুকার পাটি তৈরি করতে সময় লাগে ৪-৫ দিন। এটি বিক্রি হয় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। আর ছোট বুকার পাটি বিক্রি হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। পাটি তৈরির প্রধান উপকরণ জাম আর রং কিনে নিতে হয়। ছেনুয়ারা বেগম পাটি তৈরির পাশাপাশি হাঁস, মুরগি, ছাগল পালন, ঘরের চালে শিম এবং বাড়ির পাশে খোলা জায়গায় বিভিন্ন সবজিও চাষ করেন যা দিয়ে ঘরের চাহিদা পূরণসহ বিক্রি করে সংসারের অনেক খরচ মেটাতে পারেন।
ছেনুয়ারা বেগমের তিন ছেলে-মেয়ের সবাই স্কুলে পড়াশোনা করছে। এর মধ্যে বড় মেয়ে মিতা নুর আকতার ষষ্ঠ শ্রেণী, ছোট মেয়ে আসমাউল হুসনা প্রথম শ্রেণী এবং ছেলে মো. সায়েম শিশু শ্রেণীতে অধ্যয়নরত আছে। সম্প্রতি ছেনুয়ারা বেগম পাটি বিক্রির টাকায় ছেলে মেয়েদের পড়ালেখার জন্য চেয়ার টেবিলও তৈরি করেছেন। ছেনুয়ারা বেগমের স্বামী মুফিজুর রহমান জানান, ভিটেবাড়ি ছাড়া তাদের বাড়তি কোনো জমি নেই। তাই স্ত্রীর এসব আয়েই তার সংসার ভালোভাবে কেটে যাচ্ছে। তিনি মাঝে মধ্যে দিনমজুর হিসেবে কাজ করলেও সে টাকায় তার সংসার এবং সন্তানদের লেখাপড়া চালানো সম্ভব হতো না। ছেনুয়ারা বেগমের পাশে দাঁড়িয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক। হতদরিদ্র কর্মসূচির আওতায় পাটি তৈরির ক্ষুদ্র ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে ওই সংস্থার পক্ষ থেকে ২০১১ সালের মাঝামাঝি সময়ে ছেনুয়ারা বেগমকে ৪ হাজার টাকা দেয়া হয়। ব্র্যাক হতদরিদ্র কর্মসূচি রামু কাউয়ারখোপ কার্যালয়ের শাখা ব্যবস্থাপক আবদুর রশিদ মোল্লা জানান, ছেনুয়ারা বেগম পাটি তৈরি করে সংসারের হাল ধরে রেখেছে। তার এ উদ্যোগকে টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি ওই পরিবারের সদস্যদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করতে ব্র্যাক ছেনুয়ারা বেগমকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। এ সহায়তা ঋণ নয় এবং তা পরিশোধও করতে হবে না।
Share on Google Plus

প্রতিবেদনটি পোষ্ট করেছেন: Anonymous

a Bengali Online News Magazine by Selected News Article Combination.... একটি বাংলা নিউজ আর্টিকেলের আর্কাইভ তৈরীর চেষ্টায় আমাদের এই প্রচেষ্টা। বাছাইকৃত বাংলা নিউজ আর্টিকেলের সমন্বয়ে একটি অনলাইন নিউজ ম্যাগাজিন বা আর্কাইভ তৈরীর জন্য এই নিউজ ব্লগ। এর নিউজ বা আর্টিকেল অনলাইন Sources থেকে সংগ্রহকরে Google Blogger এর Blogspotএ জমা করা একটি সামগ্রিক সংগ্রহশালা বা আর্কাইভ। এটি অনলাইন Sources এর উপর নির্ভরশীল।
    Blogger Comment
    Facebook Comment