ইনানী সৈকতের ঝাউবন দখল করে পিকনিক স্পট

মালিক বন ও পরিবেশমন্ত্রীর ভাই রাসেল মাহমুদসহ চট্টগ্রামের শহিদুল্লাহ শহীদ ও কক্সবাজারের মনজুর আলম।।
কক্সবাজারের ইনানী সৈকতে বন বিভাগের গড়ে তোলা সবুজ বেষ্টনীর পাঁচ একর ঝাউবন দখল করে একটি প্রভাবশালী মহল গড়ে তুলেছে 'ইকো বিলাস' নামে পিকনিক স্পট।


প্রভাবশালী মহলটি সরকারি জমি দখলে নিয়ে এখানে কটেজ, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে পর্যটকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আয় করছে। প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এ সৈকত এলাকা ইজারা দেওয়া এবং এখানে কোনো রকম স্থাপনা নির্মাণ নিষিদ্ধ হলেও 'ইকো বিলাসে'র উদ্যোক্তরা দাবি করেন, তারা জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা নিয়েই পর্যটকদের জন্য ট্যুরিস্ট স্পটটি গড়ে তুলেছেন। তবে জেলা প্রশাসন এ ভূমি ইজারা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে। গতকাল সোমবার ওই এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সৈকতের প্রায় পাঁচ একর ঝাউবন দখল করে বাঁশের খুঁটি দিয়ে ঘের দেওয়া হয়েছে। বাঁশের বেড়া ও ছন দিয়ে এখানে নির্মাণ করা হয়েছে দুটি রেস্টুরেন্ট এবং ১২টি ছোট কটেজ। ১০টি তাঁবুও এখানে খাটানো হয়েছে। এ
ছাড়া রয়েছে আরও কিছু স্থাপনা।
পর্যটকদের কাছে প্রতিটি তাঁবু একদিনের জন্য ভাড়া দেওয়া হচ্ছে দেড় হাজার টাকায়। পিকনিক পার্টির কাছ থেকে একদিনের জন্য ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৭ হাজার
টাকা।
প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ জানান, তারা জেলা প্রশাসন থেকে এক সনা লিজ নিয়ে পিকনিক স্পটটি গড়ে তুলেছেন। তিনি জানান, এ প্রতিষ্ঠানের তিনজন মালিকের মধ্যে রয়েছেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের ভাই রাসেল মাহমুদ, তার স্ত্রীর বড় ভাই চট্টগ্রামের শহিদুল্লাহ শহীদ এবং কক্সবাজারের ঝিলংজা এলাকার মনজুর আলম। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মনজুর আলম জানান, স্থানীয় প্রশাসন থেকে এক সনা লিজ নিয়ে তারা এ প্রতিষ্ঠান করেছেন। তিনি জানান, ইজারা নেওয়া হয়েছে রাসেল মাহমুদের আত্মীয় শহিদুল্লাহ শহীদের নামে। সরকার ঘোষিত প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকায় ঝাউবন কীভাবে ইজারা নিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা পরিবেশের কোনো রকম ক্ষতি না করেই সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে পিকনিক স্পটটি গড়ে তুলেছি।'
শহিদুল্লাহ শহীদ জানান, প্রশাসনের প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিয়ে তারা সম্পূর্ণ অস্থায়ীভাবে পিকনিক স্পট তৈরি করেছেন। এখানে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকার কোনো রকম ক্ষতি হচ্ছে না। এ ছাড়া তারা ঝাউবনও রক্ষণাবেক্ষণ করছেন। ওই প্রতিষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা রাসেল মাহমুদের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। পরে অবশ্য তার অফিসের কর্মকর্তা পরিচয়ে একজন ফোন রিসিভ করে জানান, ইনানীতে পিকনিক স্পটের ওই জমি তারা ইজারা নিয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার কথা বলে তিনি ফোন কেটে দেন।
কক্সবাজারের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (দক্ষিণ) বিপুল কৃষ্ণ দাশ বলেন, 'ওই স্থানের ঝাউবাগান বন বিভাগের হলেও ভূমির মালিক জেলা প্রশাসন। ওই খাসজমি ইজারা দেওয়া হয়েছে কি-না তা আমাদের জানা নেই।'
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, ইনানী সৈকতের ওই ভূমি কখনও কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনার আলোকে কক্সবাজার সৈকতের এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। মেরিন ড্রাইভ সড়কের পশ্চিম পাশে সৈকতের তীর ধরে সব অবৈধ স্থাপনার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে শিগগির অভিযান পরিচালনা করা হবে।
Share on Google Plus

প্রতিবেদনটি পোষ্ট করেছেন: Unknown

a Bengali Online News Magazine by Selected News Article Combination.... একটি বাংলা নিউজ আর্টিকেলের আর্কাইভ তৈরীর চেষ্টায় আমাদের এই প্রচেষ্টা। বাছাইকৃত বাংলা নিউজ আর্টিকেলের সমন্বয়ে একটি অনলাইন নিউজ ম্যাগাজিন বা আর্কাইভ তৈরীর জন্য এই নিউজ ব্লগ। এর নিউজ বা আর্টিকেল অনলাইন Sources থেকে সংগ্রহকরে Google Blogger এর Blogspotএ জমা করা একটি সামগ্রিক সংগ্রহশালা বা আর্কাইভ। এটি অনলাইন Sources এর উপর নির্ভরশীল।
    Blogger Comment
    Facebook Comment