নকশা অনুমোদন নেই, পরিবেশ ছাড়পত্রও নেই। তবু কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের তীর ঘেঁষে (সি-ইন পয়েন্টে) তৈরি হচ্ছে ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের পাঁচতারকা হোটেল। পাশে উঠেছে ডেসটিনির আরেকটি নয়তলা ভবন।
সেখানে লাগানো সাইনবোর্ডে লেখা আছে, নির্মাণাধীন ‘বেস্ট ওয়েস্টার্ন ডেসটিনি বিচ হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট’, বাংলাদেশের প্রথম পাঁচতারকা চেইন বিচ হোটেল-কক্সবাজার। সুবিধার তালিকায় লেখা: সুপার ডিলাক্স, ডিলাক্স স্যুট, প্রেসিডেনশিয়াল স্যুট, হানিমুন স্যুট, স্পা, বার, রেস্টুরেন্ট, ব্যাংকোয়েট, বিজনেস ও ফিটনেস সেন্টার, বার-বি-কিউসহ রুফটপ রেস্টুরেন্ট।
গতকাল শনিবার দুপুরে হোটেলের নির্মাণকাজ চলতে দেখা যায়। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া সৈকতের তীরে হোটেল নির্মাণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া হোটেল নির্মাণের কারণ জানতে চেয়ে ১৭ এপ্রিল ডেসটিনি গ্রুপের এই হোটেল কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে হবে। নইলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় সমুদ্রসৈকতের জমিতে হোটেল-মোটেল তৈরির জন্য ১০০ প্লট বরাদ্দ দিয়ে বিএনপির নেতারাই ভাগাভাগি করে নেন। এটি তখন ‘বিএনপিপল্লি’ হিসেবে পরিচিতি পায়। বর্তমান সরকার অবৈধভাবে বরাদ্দ দেওয়া ৪৯টি প্লটের ইজারা বাতিল করে। ওই ১০০ প্লটের একটিতে এখন ডেসটিনির নির্মাণকাজ চলছে। এটি একজন নেতার নামে বরাদ্দ ছিল।
নকশা অনুমোদন, পরিবেশ ছাড়পত্র নেই: অনুসন্ধানে জানা গেছে, সমুদ্রতীরের প্রতিবেশ সংকটাপন্ন বালিয়াড়িতে নয়তলা ভবন নির্মাণ এবং এর দক্ষিণ পাশে আরেকটি বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন বা ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি। তা ছাড়া সমুদ্রতীরে বৈধ-অবৈধ সব ধরনের অবকাঠামো নির্মাণে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) কে এম আলমগীর গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, নকশা অনুমোদন ও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগে ডেসটিনি গ্রুপের কাগজপত্র তলব করা হয়েছে। কাগজপত্র হাতে এলে দেখা যাবে, কীভাবে তারা ভবন নির্মাণের কাজ চালাচ্ছে। তবে ডেসটিনির নয়তলা ভবনটির ব্যাপারে কক্সবাজার পৌরসভা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন রয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রায় তিন বছর ধরে কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন রাজ বিহারী দাশ। তিনি সমুদ্রতীরে বহুতল ভবন অথবা পাঁচতারা হোটেল নির্মাণের জন্য ডেসটিনি গ্রুপকে নকশা অনুমোদন দেননি বলে প্রথম আলোকে জানান। তবে সমুদ্রসৈকত ও শহরের বিভিন্ন স্থানে নিয়মবহির্ভূতভাবে বহুতল ভবনের নকশা অনুমোদন দেওয়ায় সাবেক মেয়র সরওয়ার কামালকে মেয়র পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ভারপ্রাপ্ত মেয়রের মতে, ডেসটিনি গ্রুপ সম্ভবত সরওয়ার কামালের সময় ওই ভবন নির্মাণের অনুমোদন নিয়েছিল। কিন্তু পৌরসভার অনুমোদনের একটি শর্ত হলো, নির্মাণকাজ শুরুর আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে সাবেক মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
সমুদ্রতীরে নতুন করে ভবন নির্মাণে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাহলে কীভাবে ডেসটিনি গ্রুপ বহুতল ভবন নির্মাণ করছে? জবাবে জেলা প্রশাসনের এনডিসি কে এম আলমগীর বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশে জেলা প্রশাসন সমুদ্রসৈকতের সীমানা নির্ধারণ করছে। ডেসটিনির নির্মাণকাজ সীমানার মধ্যে পড়লে তা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
অনুমোদন ছাড়া ডেসটিনি গ্রুপ সমুদ্রতীরের বালিয়াড়িতে কী করে ভবন নির্মাণ করছে, জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, ‘কয়েক বছর আগে পৌরসভা থেকে অনুমোদন নিয়ে সম্ভবত ডেসটিনি সমুদ্রতীরে নয়তলা ভবনটি নির্মাণ করেছে। এখন আলাদা জমিতে নতুন করে বহুতল ভবন নির্মাণ করতে হলে অবশ্যই কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগবে। কিন্তু নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডকে আমরা নকশা অনুমোদন দেইনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এনডিসিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
যোগাযোগ করা হলে ডেসটিনির বেস্ট ওয়েস্টার্ন বিচ হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট প্রকল্পের জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলী মাজহারুল ইসলাম বলেন, নয়তলা হোটেলের পাশে আলাদাভাবে আরেকটি চারতলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি নয়তলা ভবনের সঙ্গেই অনুমোদন দেয় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। তাই এখন নতুন করে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
ভবন নির্মাণের আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক—এ কথা স্মরণ করিয়ে দিলে মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য ২০১১ সালে পরিবেশ অধিদপ্তরে দরখাস্ত করেছিলাম। কিন্তু নানা কারণ দেখিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর এ পর্যন্ত ছাড়পত্র দিচ্ছে না। তাই ছাড়পত্র ছাড়াই ভবনের নির্মাণকাজ চালানো হচ্ছে।’
তবে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য ডেসটিনি গ্রুপ এ পর্যন্ত কোনো আবেদনই করেনি। তা ছাড়া পরিবেশ সংকটাপন্ন এই সৈকত এলাকায় বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য ছাড়পত্র দেওয়া যায় না।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে ডেসটিনি গ্রুপ সমুদ্রতীরে বহুতল ভবন নির্মাণ করলেও কেউ বাধা দিচ্ছে না। আমরা বিষয়টি উচ্চ আদালতকে অবগত করার চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যে পরিবেশবাদী সংগঠনের একজন শীর্ষস্থানীয় নতা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।’
জানা গেছে, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় সমুদ্রসৈকতের জমিতে হোটেল-মোটেল তৈরির জন্য ১০০ প্লট বরাদ্দ দিয়ে বিএনপির নেতারাই ভাগাভাগি করে নেন। এটি তখন ‘বিএনপিপল্লি’ হিসেবে পরিচিতি পায়। বর্তমান সরকার অবৈধভাবে বরাদ্দ দেওয়া ৪৯টি প্লটের ইজারা বাতিল করে। ওই ১০০ প্লটের একটিতে এখন ডেসটিনির নির্মাণকাজ চলছে। এটি একজন নেতার নামে বরাদ্দ ছিল।
নকশা অনুমোদন, পরিবেশ ছাড়পত্র নেই: অনুসন্ধানে জানা গেছে, সমুদ্রতীরের প্রতিবেশ সংকটাপন্ন বালিয়াড়িতে নয়তলা ভবন নির্মাণ এবং এর দক্ষিণ পাশে আরেকটি বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন বা ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি। তা ছাড়া সমুদ্রতীরে বৈধ-অবৈধ সব ধরনের অবকাঠামো নির্মাণে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) কে এম আলমগীর গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, নকশা অনুমোদন ও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগে ডেসটিনি গ্রুপের কাগজপত্র তলব করা হয়েছে। কাগজপত্র হাতে এলে দেখা যাবে, কীভাবে তারা ভবন নির্মাণের কাজ চালাচ্ছে। তবে ডেসটিনির নয়তলা ভবনটির ব্যাপারে কক্সবাজার পৌরসভা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন রয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রায় তিন বছর ধরে কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন রাজ বিহারী দাশ। তিনি সমুদ্রতীরে বহুতল ভবন অথবা পাঁচতারা হোটেল নির্মাণের জন্য ডেসটিনি গ্রুপকে নকশা অনুমোদন দেননি বলে প্রথম আলোকে জানান। তবে সমুদ্রসৈকত ও শহরের বিভিন্ন স্থানে নিয়মবহির্ভূতভাবে বহুতল ভবনের নকশা অনুমোদন দেওয়ায় সাবেক মেয়র সরওয়ার কামালকে মেয়র পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ভারপ্রাপ্ত মেয়রের মতে, ডেসটিনি গ্রুপ সম্ভবত সরওয়ার কামালের সময় ওই ভবন নির্মাণের অনুমোদন নিয়েছিল। কিন্তু পৌরসভার অনুমোদনের একটি শর্ত হলো, নির্মাণকাজ শুরুর আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে সাবেক মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
সমুদ্রতীরে নতুন করে ভবন নির্মাণে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাহলে কীভাবে ডেসটিনি গ্রুপ বহুতল ভবন নির্মাণ করছে? জবাবে জেলা প্রশাসনের এনডিসি কে এম আলমগীর বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশে জেলা প্রশাসন সমুদ্রসৈকতের সীমানা নির্ধারণ করছে। ডেসটিনির নির্মাণকাজ সীমানার মধ্যে পড়লে তা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
অনুমোদন ছাড়া ডেসটিনি গ্রুপ সমুদ্রতীরের বালিয়াড়িতে কী করে ভবন নির্মাণ করছে, জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, ‘কয়েক বছর আগে পৌরসভা থেকে অনুমোদন নিয়ে সম্ভবত ডেসটিনি সমুদ্রতীরে নয়তলা ভবনটি নির্মাণ করেছে। এখন আলাদা জমিতে নতুন করে বহুতল ভবন নির্মাণ করতে হলে অবশ্যই কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগবে। কিন্তু নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডকে আমরা নকশা অনুমোদন দেইনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এনডিসিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
যোগাযোগ করা হলে ডেসটিনির বেস্ট ওয়েস্টার্ন বিচ হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট প্রকল্পের জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলী মাজহারুল ইসলাম বলেন, নয়তলা হোটেলের পাশে আলাদাভাবে আরেকটি চারতলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি নয়তলা ভবনের সঙ্গেই অনুমোদন দেয় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। তাই এখন নতুন করে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
ভবন নির্মাণের আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক—এ কথা স্মরণ করিয়ে দিলে মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য ২০১১ সালে পরিবেশ অধিদপ্তরে দরখাস্ত করেছিলাম। কিন্তু নানা কারণ দেখিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর এ পর্যন্ত ছাড়পত্র দিচ্ছে না। তাই ছাড়পত্র ছাড়াই ভবনের নির্মাণকাজ চালানো হচ্ছে।’
তবে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য ডেসটিনি গ্রুপ এ পর্যন্ত কোনো আবেদনই করেনি। তা ছাড়া পরিবেশ সংকটাপন্ন এই সৈকত এলাকায় বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য ছাড়পত্র দেওয়া যায় না।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে ডেসটিনি গ্রুপ সমুদ্রতীরে বহুতল ভবন নির্মাণ করলেও কেউ বাধা দিচ্ছে না। আমরা বিষয়টি উচ্চ আদালতকে অবগত করার চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যে পরিবেশবাদী সংগঠনের একজন শীর্ষস্থানীয় নতা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।’
Blogger Comment
Facebook Comment