রাত জেগে কুতুবদিয়া উপকূলবাসীর পাহারা

কুতুবদিয়ার উপকূলবাসীকে জলদস্যুর ভয়ে রাত জেগে পাহারা দিতে হচ্ছে। প্রায় প্রতি রাতেই সংঘবদ্ধ জলদস্যুরা কুতুবদিয়া উপকূলের বিভিন্ন গ্রামে হানা দিচ্ছে। বঙ্গোপসাগরে দস্যুতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাগরে জেলেদের মাছ ধরা প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ অবস্থায় অসহায় হয়ে পড়েছে ফিশিং ট্রলার মালিক ও জেলেরা।

স্থানীয়রা জানান, গত ১৪ জুলাই সকালে কুতুবদিয়ার উত্তর ধুরং ইউনিয়নের মিয়ারাকাটা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের এফবি আয়েশা ও একই এলাকার বাদশা কোম্পানির এফবি সোনালি ফিশিং ট্রলার দুটি সাগর থেকে মাছ ধরে কুতুবদিয়া উপকূলে ফেরার পথে ফাটারচর এলাকায় জলদস্যুরা ট্রলার দুটিতে হানা দেয়। এ সময় মুক্তিপণের দাবিতে হলদস্যুরা ট্রলারসহ জেলেদের ধরে নিয়ে গেছে। ওই ট্রলার দুটিতে ১৩ জেলে রয়েছে। জেলেসহ ট্রলার ফেরত দিতে জলদস্যুরা দুই লাখ টাকা করে প্রতি ট্রলার থেকে মুক্তিপণ দাবি করেছে। গত ১০ জুলাই আলী আকবর ডেইল জেটিঘাট এলাকা থেকে ডাকাতদল এফবি ছৈয়দা ফিশিং ট্রলারটি নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয়। গত ১৩ জুলাই সকালে চুল্লাহরপাড়ার দেলোয়ার হোসেন কোম্পানির এফবি মায়ের দোয়া ফিশিং ট্রলার ও ৭ জেলেকে সাগরের গুলিরধার নামকস্থান থেকে জলদস্যুরা অপহরণ করে নিয়ে যায়। মালিকপক্ষ ডাকাতদের চাহিদামতো টাকা পরিশোধ করতে না পারায় জেলেরাসহ ট্রলারটি ছাড়া পায়নি। অপহৃত জেলেদের পরিবারে এখন কান্নার আহাজারি চলছে।
সরেজমিনে কুতুবদিয়ার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, কুতুবদিয়ার উপকূলে ডাকাত আতঙ্কে গ্রামবাসী রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে। পালাক্রমে পাহারা বসিয়েছে উপকূলের পূর্বাংশে বসবাসকারী লোকজন। এর সঙ্গে কুতুবদিয়া থানা পুলিশ টহল জোরদার করেছে।
এলাকাবাসী জানায়, কুতুবদিয়া চ্যানেলে গত ৮ জুলাই থেকে জলদস্যুদের উৎপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। জলদস্যুরা সাগরে ফিশিং ট্রলার ডাকাতি করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না, এখন উপকূলের ঘরবাড়িতে দস্যুরা হানা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। বর্ষার বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জলদস্যুরা কুতুবদিয়ার উপকূলের গ্রামগুলোতে হানা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। অবস্থা বুঝে গ্রামের লোকজন সচেতন হয়ে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পুলিশি টহলও জোরদার করা হয়েছে।
কুতুবদিয়া দ্বীপের উপকূলের পূর্বাংশের তাবলরচর, পূর্ব আলী আকবর ডেইল, মুরালিয়া, অমজাখালী, লেমশীখালীর ছিদ্দিক হাজির পাড়া, দরবারঘাট, পেয়ারাকাটা, সতরউদ্দিন, ফয়জনিরবাপের পাড়া, আকবরবলীপাড়া, চর ধুরং, কায়ছারপাড়া, চুল্লারপাড়াসহ প্রায় ৩০টি গ্রামের অর্ধ লাখ মানুষ সন্ধ্যা নামলে বাঁশি, লাঠি নিয়ে এলাকা পাহারায় নেমে পড়ে। তবে পুলিশও বসে নেই। কুতুবদিয়া থানা পুলিশ জানায়, সন্ধ্যার পর কয়েকটি গ্রুপ টহল দিচ্ছে।
দ্বীপের উত্তর ধুরং ইউনিয়নের পেয়ারাকাটা গ্রামের ছালেহ আহমদ জানান, কুতুবদিয়ার জলদস্যু সম্রাট বাদল্যার নেতৃত্বে ২৮-৩০ জনের একটি দল সাগরে দস্যুতা চালিয়ে যাচ্ছে। এ জলদস্যু দলে কুতুবদিয়ার তাবলরচর এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি, পেকুয়া উপজেলার পশ্চিম টেটংয়ের আবদু শুক্কুর, বাঁশখালী দক্ষিণ পুঁইছড়ির একাধিক মামলার পলাতক আসামি জাকের হোছাইন, বাঁশখালীর খুদুকখালীর জলদস্যু সর্দার বাইশ্যা, ছনুয়া গ্রামের গফুর, লেমশীখালীর রুহুল কাদের ও মজিদ রয়েছে।
কুতুবদিয়া থানার ওসি আবুল হাসেম জানান, ট্রলার অপহরণের বিষয়টি অনেক সময় দেখা গেছে মালিকদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে এক পক্ষ অন্যপক্ষের ট্রলার এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে আটকে রাখে। সাগরে ডাকাতি হলে কুতুবদিয়া থানা পুলিশের করার কিছু নেই।
Share on Google Plus

প্রতিবেদনটি পোষ্ট করেছেন: Unknown

a Bengali Online News Magazine by Selected News Article Combination.... একটি বাংলা নিউজ আর্টিকেলের আর্কাইভ তৈরীর চেষ্টায় আমাদের এই প্রচেষ্টা। বাছাইকৃত বাংলা নিউজ আর্টিকেলের সমন্বয়ে একটি অনলাইন নিউজ ম্যাগাজিন বা আর্কাইভ তৈরীর জন্য এই নিউজ ব্লগ। এর নিউজ বা আর্টিকেল অনলাইন Sources থেকে সংগ্রহকরে Google Blogger এর Blogspotএ জমা করা একটি সামগ্রিক সংগ্রহশালা বা আর্কাইভ। এটি অনলাইন Sources এর উপর নির্ভরশীল।
    Blogger Comment
    Facebook Comment