কক্সবাজারে দুই দিনের অকালবর্ষণঃ লবণ শুঁটকি রবিশস্য উৎপাদন ব্যাহত, বোরোর জন্য আশীর্বাদ

কক্সবাজারে দুই দিন ধরে অকাল বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। গত শুক্রবার সকাল থেকেই কক্সবাজারের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে শুরু হয় বৃষ্টি।
বর্ষণে কক্সবাজার উপকূলের ৭০ হাজার একর জমির লবণের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।

শুক্রবার বৃষ্টি শুরুর পর পরই বন্ধ হয়ে যায় লবণের উৎপাদন। বৃষ্টির কারণে শুঁটকিমহাল ও রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে বর্ষণ এ এলাকার বোরো ফসলের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। কক্সবাজারে শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে গতকাল শনিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
আবহাওয়া অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার উপকূলের কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া, চকরিয়া, কক্সবাজার সদর, টেকনাফ ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলাসহ প্রায় ৭০ হাজার একর উপকূলীয় জমিতে প্রতি মৌসুমে লবণ উৎপাদন হয়ে থাকে। অন্যান্য মৌসুমের মতো এবারও গত ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে লবণের উৎপাদন। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা (বিসিক) কক্সবাজারের লবণ প্রকল্পের কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিজামুদ্দিন গতকাল কালের কণ্ঠকে জানান, সরকার চলতি মৌসুমে দেশে লবণের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ১৩ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন। এবার মৌসুমের শুরুতে লবণের দাম মাঠপর্যায়ে কম ছিল। এ কারণে উৎপাদন শুরু হয় বিলম্বে। এবার ভারত ও মিয়ানামার থেকে চোরাই পথে লবণ পাচার বন্ধ থাকায় মাঠপর্যায়ে লবণের দাম বেড়ে যায়। শেষ সময়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে উৎপাদনকারীরা মাঠে নামে। গত সপ্তাহ পর্যন্ত বিসিকের হিসাব মতে, উৎপাদন হয়েছে প্রায় চার লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন লবণ। গত বছরও উৎপাদন হয়েছিল ১৩ লাখ মেট্রিক টন। দেশে প্রতিবছর লবণের চাহিদা রয়েছে ১২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন।
বিসিকের এক কর্মকর্তা জানান, লবণ সূর্যতাপে প্রাকৃতিকভাবে সামুদ্রিক লবণাক্ত পানি থেকে উৎপাদন করা হয়। এত দিন শীত মৌসুম থাকায় সূর্যতাপের প্রখরতা ছিল না। তাই উৎপাদনের পরিমাণ ছিল কম। সাধারণত মার্চ-এপ্রিলের প্রখর সূর্যতাপেই বেশি লবণ উৎপাদন হয়ে থাকে। আগামী মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত হচ্ছে লবণ উৎপাদনের সময়। বর্ষণে উৎপাদন সাময়িক ব্যাহত হলেও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী উৎপাদন আশা করছেন বিসিক কর্মকর্তারা।
এদিকে অব্যাহত বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে বোরো চাষে এক প্রকার বিপর্যয় নেমে এসেছিল। আর এমন সময়ে গত দুই দিনের বৃষ্টিপাত বোরো চাষের জন্য 'বড় নিয়ামক' হয়ে এসেছে। কক্সবাজারের উখিয়ার রত্নাপালং গ্রামের বোরোচাষি আবুল মনসুর চৌধুরী কালের কণ্ঠকে জানান, এবারের রমজান মাস থেকে বিদ্যুতের লোডশেডিং ছিল না। মনে করেছিলাম বিদ্যুতের লোডশেডিং নামক অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছি। এ কারণে এবার আশায় বুক বেঁধে নেমেছিলাম। প্রধানমন্ত্রীও বারবার বলছিলেন দেশে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা হবে। এ কারণে অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার আরো বেশি জমিতে চাষ দিয়েছিলাম। কিন্তু চাষের মাঝপথে এসে দেখি ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং। ফসলের ত্রাহি অবস্থার মুখে অবশেষে গতকালের বর্ষণ পেয়ে কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে। এদিকে বৃষ্টিতে কক্সবাজার উপকূলের শুঁটকি মহাল এবং রবিশস্য আলু, টমেটো, বেগুন, ঢেঁড়সসহ অন্যান্য সবজিও ক্ষতির শিকার হয়েছে।
Share on Google Plus

প্রতিবেদনটি পোষ্ট করেছেন: Unknown

a Bengali Online News Magazine by Selected News Article Combination.... একটি বাংলা নিউজ আর্টিকেলের আর্কাইভ তৈরীর চেষ্টায় আমাদের এই প্রচেষ্টা। বাছাইকৃত বাংলা নিউজ আর্টিকেলের সমন্বয়ে একটি অনলাইন নিউজ ম্যাগাজিন বা আর্কাইভ তৈরীর জন্য এই নিউজ ব্লগ। এর নিউজ বা আর্টিকেল অনলাইন Sources থেকে সংগ্রহকরে Google Blogger এর Blogspotএ জমা করা একটি সামগ্রিক সংগ্রহশালা বা আর্কাইভ। এটি অনলাইন Sources এর উপর নির্ভরশীল।
    Blogger Comment
    Facebook Comment