আরাকানে সামরিক আইন জারি, সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা

গত কয়েকদিন থেকে মিয়ানমারের বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন আরাকান প্রদেশে (রাখাইনে) সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর হামলা পরবর্তী সহিংস


পরিস্থিতিতে দেশটির সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত সরকারের রাষ্ট্রপতি থেইন সেইন ১০ জুন রোববার থেকে পুরো প্রদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য সামরিক শাসন জারি করেছেন।

রোববার  রাত আটটা দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এই তথ্য জানায়। সামরিক শাসন জারির এ সংবাদ আরাকানের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে আতংক বেড়ে গেছে। মিয়ানমার মংডুতে আটকে পড়া ৫৫ বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের মধ্যে ফিরে আসা ৩৯ জন ব্যাবসায়ী জানান, মিয়ানমারের জাতিগত দাঙ্গায় আরাকানের সহস্রাধিক বসতবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। দাঙ্গায় নিহত হয়েছে শতাধিক।

মিয়ানমারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আহত হয়েছেন তিন শতাধিক রোহিঙ্গা। মুসলিম অধ্যুষিত বিভিন্ন গ্রামে আগুন জ্বালিয়ে দেয়ার পর ওই সব গ্রামের মানুষকে ঘিরে রাখা হয়েছে যেন বের হতে না পারে। গ্রামবাসীরা আগুন থেকে বের হতে গিয়ে হামলার শিকার হচ্ছে। অনেক গ্রামের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশে নিচে দিন যাপন করছেন।

আকিয়াব বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী শফি খান মসজিদসহ অন্তত ছয় মসজিদ পুড়িয়ে দিয়েছে সংখ্যাগুরু বৌদ্ধরা। মংডু শহরেও মুসলমানদের কয়েক’শ দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে রাখাইনরা।

মিয়ানমার থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, ৩ জুন রাখাইন প্রদেশের টাংগোপ শহরে ১০ মুসলিম হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে শুক্ররবার দুপুরে মংডু শহর সহ কয়েকটি মসজিদে জুমার নামাজ শেষে মুসলিম হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ খবর মিয়ানমার জুড়ে ছড়িয়ে পড়লে জান্তা সরকারের নাসাকা এ্যাকশানে যায়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে মংডু শহরের আশপাশের এলাকা নুরুল্লাহ পাড়া, খিলাইদং, চার কম্ব, গদুচরা, বাগগুনা, কাদিও বিল, নরমাইন্না পাড়া, সিকদার পাড়া, গর্জন দিয়া, বমু পাড়া, হাউর ছড়া, ছমবইন্নাপাড়া, শিলখালী, মেরুংলোয়া, ব্যাপক সৈন্য মোতায়েন করেছে। এসব এলাকা সেনাবাহিনীর দখলে রয়েছে।

এদিকে বিজিবি ১৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল খালেকুজ্জামান জানিয়েছেন, মংডু শহরে রোহিঙ্গা-রাখাইনদের সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে সীমান্ত এলাকায় ব্যাপক সর্তকর্তামূলক ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বহু জাতি ও সম্প্রদায়ের দেশ মিয়ানমারের বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী আরাকান প্রদেশের সংখ্যালঘু মুসলমানদের কোনো ধরনের নাগরিক অধিকারের স্বীকৃতি নেই দেশটির সংবিধানে। প্রদেশটিতে জাতিসংঘের ভাষায় ‘বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়’ মুসলিম ধর্মালম্বী রোহিংগাদের চলাফেরার ওপর সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে রাখে। দেশটির প্রশাসন প্রায়ই এদের ‘বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী’ বলে প্রচারণা চালিয়ে থাকে।
Share on Google Plus

প্রতিবেদনটি পোষ্ট করেছেন: Unknown

a Bengali Online News Magazine by Selected News Article Combination.... একটি বাংলা নিউজ আর্টিকেলের আর্কাইভ তৈরীর চেষ্টায় আমাদের এই প্রচেষ্টা। বাছাইকৃত বাংলা নিউজ আর্টিকেলের সমন্বয়ে একটি অনলাইন নিউজ ম্যাগাজিন বা আর্কাইভ তৈরীর জন্য এই নিউজ ব্লগ। এর নিউজ বা আর্টিকেল অনলাইন Sources থেকে সংগ্রহকরে Google Blogger এর Blogspotএ জমা করা একটি সামগ্রিক সংগ্রহশালা বা আর্কাইভ। এটি অনলাইন Sources এর উপর নির্ভরশীল।
    Blogger Comment
    Facebook Comment