রামুর বাগানে সাদা ‘রস’ সংগ্রহের ধুম

কক্সবাজারের রামুতে রাবার বাগানে সাদা ‘রস’ সংগ্রহের ধুম লেগেছে। বাগানের ৬৯ হাজার গাছ থেকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাবার রস সংগ্রহের কাজ করছেন শ্রমিকেরা।

সম্প্রতি এক সকালে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কসংলগ্ন রামু রাবার বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, বাগানের হাজার হাজার গাছে ঝুলছে ছোট ছোট মাটির পাত্র। গাছ থেকে সাদা রঙের রস (কষ) ঝরে পড়ে ওই পাত্রে।
শ্রমিকেরা জানান, কাঁচা রস বালতিতে ভরে প্রথমে কারখানায় সরবরাহ করা হয়। সেখানে কষের সঙ্গে পানি ও এসিড মিশিয়ে নির্ধারিত স্টিলের জারে (ফ্রেমে) জমা রাখা হয়। এরপর রোলার মেশিনের মাধ্যমে রস থেকে পানি বের করে ড্রিপিং শেডে শুকানো হয়। পরে ‘ধুম ঘরে’ (আগুনে পোড়ানো হয় যেখানে) তা পোড়ানো হয়। ওই প্রক্রিয়া শেষে রাবার বস্তাভর্তি করে গুদামজাত করা হয়।
রাবারশ্রমিক মো. হারুন ও মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিদিন গড়ে একজন শ্রমিক ৩৫ থেকে ৪০ কেজি রস সংগ্রহ করতে পারেন। প্রতি কেজি রস সংগ্রহের জন্য তাঁরা পাঁচ টাকা পারিশ্রমিক পান।
রাবার উৎপাদন কারখানার তত্ত্বাবধায়ক নুরুল আনোয়ার জানান, কারখানা থেকে প্রতিদিন গড়ে চার হাজার কেজি রাবার উৎপাদিত হয়। সারা বছর রাবার উৎপাদন চলে। তবে বর্ষায় রস আহরণ কিছুটা কমে গেলে উৎপাদনও কমে যায়। মূলত শীত মৌসুমে গাছ থেকে বেশি রস পাওয়া যায়।
নুরুল আনোয়ার বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে রাবারের চাহিদা বাড়ায় চলতি বছর রাবারের দাম বেড়েছে। গত বছর প্রতি কেজি রাবার বিক্রি হতো ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। জানুয়ারি মাস থেকে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ২৮৫ টাকায়। রাবার দিয়ে জুতা, ফুটবল, টায়ার-টিউব, গাড়ির যন্ত্রাংশ, আঠা বা গ্লু, ওষুধ, ব্যাগ, বেল্ট তৈরি হয় বলে তিনি জানান।
বন মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন বাগানটির তত্ত্বাবধান করছে। বাগানের ব্যবস্থাপক মো. আয়ুব আলী বলেন, রাবারের উৎপাদন বাড়াতে আগামী জুলাই মাসে বাগানের আরও ৫০ একর জায়গায় ১২ হাজার গাছ লাগানো হবে। আয়ুব আলী জানান, গত অর্থবছরে বাগানে উৎপাদিত এক লাখ ২২ হাজার ৩৩১ কেজি রাবার বিক্রি করে এক কোটি ৩২ লাখ ৫০ হাজার ৮১৫ টাকা লাভ হয়েছে। চলতি অর্থবছর লাভের পরিমাণ আরও বাড়বে।
জানা যায়, ১৯৬০ সালে রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা, কাউয়ারকূপ ও গর্জনিয়া ইউনিয়নে বন বিভাগের ৬০০ একর জমি ইজারা নিয়ে এ রাবার বাগানটি গড়ে তোলা হয়। পরে বাগানটির পরিধি বেড়ে দুই হাজার ১৩১ একরে দাঁড়ায়। বর্তমানে বাগানে গাছ আছে এক লাখ ৫৬ হাজারটি। এর মধ্যে ৮৭ হাজার ১২০টি গাছ রস উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। বাগানের একজন কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি প্রতিদিন বাগানে ঢুকে বিপুল পরিমাণ রাবার চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। বাগানের সীমানাবেষ্টনী না থাকায় চুরি রোধ করা যাচ্ছে না।
Share on Google Plus

প্রতিবেদনটি পোষ্ট করেছেন: Unknown

a Bengali Online News Magazine by Selected News Article Combination.... একটি বাংলা নিউজ আর্টিকেলের আর্কাইভ তৈরীর চেষ্টায় আমাদের এই প্রচেষ্টা। বাছাইকৃত বাংলা নিউজ আর্টিকেলের সমন্বয়ে একটি অনলাইন নিউজ ম্যাগাজিন বা আর্কাইভ তৈরীর জন্য এই নিউজ ব্লগ। এর নিউজ বা আর্টিকেল অনলাইন Sources থেকে সংগ্রহকরে Google Blogger এর Blogspotএ জমা করা একটি সামগ্রিক সংগ্রহশালা বা আর্কাইভ। এটি অনলাইন Sources এর উপর নির্ভরশীল।
    Blogger Comment
    Facebook Comment