বঙ্গোপসাগরের করাল গ্রাসে শাহপরীর দ্বীপঃ আতঙ্কে ৩০ হাজার অধিবাসী

টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সাগরের করাল গ্রাসে পড়লেও এখনো পর্যন্ত কেউ এগিয়ে আসেনি। দ্বীপের শতাধিক বাড়ি-ঘর গিলে নিয়েছে জোয়ারের পানি। ফলে আতঙ্কে রয়েছে ঐ এলাকার ৩০ হাজার অধিবাসী। গত তিন দিন ধরে মুলভুখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে শাহপরীরদ্বীপ।

জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ সড়ক ভাঙনের কারণে এ অবস্থার সুষ্টি হয়েছে। ফলে চলাচল ও পারাপারের মাধ্যম হয়ে উঠেছে নৌকা-সাঁকো। জনপ্রতি ১০ টাকায় নৌকা চড়ে ও পাঁচ টাকা দিয়ে সাঁকো পারাপার করছে ভুক্তভোগীরা। সকাল ও রাতের জোয়ারে শতাধিক বাড়ি-ঘর ইতিমধ্যে সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। অর্ধ-বিলীন অবস্থায় রয়েছে মসজিদ ও অসংখ্য বাড়ি-ঘর। জীবন বাঁচাতে মূল্যবান জিনিস পত্র নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে আতংকিত লোকজন।
সরেজমিন দেখা যায়, গতকাল শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিমপাড়ার উত্তর ও দক্ষিণ পাশ্বের শতাধিক বাড়ি-ঘর বিলীন হয়ে গেছে। সাগরের গ্রাস আতঙ্কে রয়েছে আরো কয়েক শতাধিক পরিবার। এরা ঘর থেকে মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে। রাতের জোয়ারে বাড়ি-ঘর বিলীনের ভয়ে অন্যত্র সরে যাচ্ছে তারা।
শাহপরীরদ্বীপ পশ্চিম পাড়ায় ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে অনেকের বাড়ি-ঘর। তারা বর্তমানে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। ঘরের সাথে তাদের প্রয়োজনীয় সকল পণ্যই সাগর গ্রাস করেছে বলে জানিয়েছেন তারা।

শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম পাড়ায় মৃত শহর মূল্লুকের পুত্র দিল মোহাম্মদ জানায়, তাদের পরিবারের ১০টিসহ কয়েকশ বসতবাড়ি সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। আশ্রয় নেওয়ার মতো তাদের কোন স্থান নেই। পবিত্র রমজান ও ভারী বর্ষণে তাদের এখন কি উপায় হবে। তার মতে , দ্বীপের যেখানে ভাঙনের কোন সম্ভাবনা ছিল না, সেখানটাই অকস্মাৎ গ্রাস করেছে সাগর। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের অভাবে এ দশা হয়েছে বলে দাবি তার। জরুরী ব্যবস্থা না নিলে শাহপরীর দ্বীপ মানচিত্র থেকে মুছে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

শাহপরীরদ্বীপ পশ্চিমপাড়া ও দক্ষিণ পাড়ার শত শত পরিবার ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে। এ মৌসুমে পুরো দ্বীপ সাগরে বিলিন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন তারা। সাগরের বাড়ন্ত জোয়ারের পানি এলাকায় প্রবেশ করে নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ী, ফসলী জমি, ঘের, শাহপরীর দ্বীপ সড়ক ও চাষাবাদের জমি ডুবে রয়েছে। থৈ থৈ করছে শাহপরীরদ্বীপ ও হারিয়াখালীর মাঝখানের সমস্ত এলাকা। প্রধান সড়কটি কয়েকটি স্থানে ভাঙনের ফলে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন এলাকাবাসী।

এব্যাপারে সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যান হামিদুর রহমান বলেন, ভাঙনের ব্যাপারে আগাম সতর্ক করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছিল।

স্থানীয়রা জানায়, বঙ্গোপসাগর ও নাফ নদীর সংযোগ ভরা খালটি খুলে দেয়া হলে বাঁধ রক্ষা করা সম্ভব। এর অন্যথা হলে জোয়ারের পানি লোকালয় প্লাবিত করবে প্রতিদিন। এখানকার ৩০ হাজার এলাকাবাসীকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আ.ন.ম নাজিম উদ্দিন জানান, ভাঙা সড়ক মেরামতে ব্যবস্থা নিতে সওজ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। শাহপরীরদ্বীপে ভাঙনের কবলে পড়া লোকজনকে ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা জানালেও দ্বীপ রক্ষার কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেন নি। তবে অব্যাহত ভাঙনের কথা স্বীকার করে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
Share on Google Plus

প্রতিবেদনটি পোষ্ট করেছেন: Unknown

a Bengali Online News Magazine by Selected News Article Combination.... একটি বাংলা নিউজ আর্টিকেলের আর্কাইভ তৈরীর চেষ্টায় আমাদের এই প্রচেষ্টা। বাছাইকৃত বাংলা নিউজ আর্টিকেলের সমন্বয়ে একটি অনলাইন নিউজ ম্যাগাজিন বা আর্কাইভ তৈরীর জন্য এই নিউজ ব্লগ। এর নিউজ বা আর্টিকেল অনলাইন Sources থেকে সংগ্রহকরে Google Blogger এর Blogspotএ জমা করা একটি সামগ্রিক সংগ্রহশালা বা আর্কাইভ। এটি অনলাইন Sources এর উপর নির্ভরশীল।
    Blogger Comment
    Facebook Comment