স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় লণ্ডভণ্ড কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদীর দুই পাশের বেড়িবাঁধ ও সড়ক যোগাযোগ মেরামতে এখনো কোনো সরকারি বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
বন্যা পরবর্তী দুই উপজেলার সাথে বর্তমানে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ অনেকটা বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব সড়ক ও বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামত না করলে অল্প বৃষ্টিতে আবারও এলাকা বন্যাকবলিত হবে। এতে মাতামুহুরী নদীর আশপাশের কৃষি জমিগুলো অনাবাদি পড়ে থাকবে।তবে এই সমস্যা বেশিদিন থাকবে না এবং অচিরেই বন্যাবিধ্বস্ত সড়ক ও বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি। তিনি বলেন, 'বন্যা পরবর্তী বেড়িবাঁধ ও সড়ক যোগাযোগ মেরামতে দ্রুত বরাদ্দ পেতে কয়েকদিন আগে আমি সচিবালয়ে পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের সাথে দেখা করেছি। এ সময় মন্ত্রীরা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন চলতি সপ্তাহের মধ্যে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ ছাড় করা হবে এবং টিআর-কাবিখায় স্বল্প এবং দরপত্রের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ চালানো হবে। এছাড়া পানিসম্পদমন্ত্রী মহেশখালীর ধলঘাটা বেড়িবাঁধের কাজ অতি সহসাই শুরু করবেন বলে জানান।' অবশ্য ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে জেলা পরিষদের প্রশাসক মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য হাসিনা আহমদ, চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিমসহ জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা দ্রুত সরকারি বরাদ্দ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
৮৭ সালের পর এবারের প্রলয়ংকরী বন্যায় চকরিয়ার সব ইউনিয়ন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাতামুহুরী নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ সবচে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব এলাকায় বিধ্বস্ত হয়ে গেছে বেড়িবাঁধ ও সড়ক যোগাযোগ। কাকারা ইউনিয়নের মাতামুহুরী নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প ধসে গেছে। ভেঙে গেছে নদীর পানি ঠেকানোর জন্য নির্মিত প্রতিরক্ষা দেওয়াল।
কাকারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলী মনছুর বলেন, 'মাতামুহুরী নদী এলাকার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্তব্ধ করে দিয়েছে। নদীর দুইপার ভেঙে এমন অবস্থা হয়েছে একটু বৃষ্টিতে আবারো বন্যাকবলিত হয়ে পড়বে। হাজার হাজার একর ফসলি জমি বর্ষা মৌসুমে সম্পূর্ণ অনাবাদি থাকবে।' কাকারার কৃষক শফিউল্লাহ বলেন, 'এমনিতে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছি। আবার বীজ কিনে নতুন করে বীজতলা রোপণের সাহস পাচ্ছি না।'
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার জাকির হোসেন জানান, বন্যায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও বেড়িবাঁধ সংস্কারে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। কিন্তু এখনো কোনো বরাদ্দ না পাওয়ায় কাজ শুরু করা যায়নি। পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু বলেন, 'সামুদ্রিক অস্বাভাবিক জোয়ার ও বন্যায় লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া কাঁকপাড়া বেড়িবাঁধ দিয়ে এখনো জোয়ারের পানি ঢুকে উজানটিয়া ও মগনামা ইউনিয়ন প্লাবিত হচ্ছে।'
Blogger Comment
Facebook Comment