রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া চাইল্ল্যাতলী গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বানবাসি শিক্ষার্থীরা নৌকায় চড়ে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে।
কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ আর ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ দিয়ে বাঁকখালী নদীর পানি ঢুকে পড়েছে এলাকায়। ফলে চাইল্ল্যাতলী গ্রামের পানিবন্দি মানুষ পড়েছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে। এরই মধ্যে গত শনিবার শুরু হয় চাইল্যাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা। কিন্তু কয়েকদিন ধরে বিদ্যালয়ের চারপাশসহ পুরো এলাকা বন্যা পল্গাবিত হয়ে পড়ায় ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিতে পারবে না এমন আশঙ্কা দেখা দেয়।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের পানিবন্দি চাইল্ল্যাতলী গ্রামসহ আশপাশের গ্রামগুলোকে দেখে মনে হয়, এক একটি দ্বীপ। পানিবন্দি হয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে ওই সব গ্রামে বসবাসকারীরা। এলাকার একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাইল্ল্যাতলী উচ্চ বিদ্যালয়টিও পানিবন্দি হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। চারদিকে বন্যার পানি, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন যাতায়াতের সব পথ। এ অনিশ্চয়তা দূর করতে পরীক্ষার্থী শিক্ষার্থীদের জন্য নৌকায় যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছেন ওই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আবুল কালাম আজাদ। দুই শতাধিক ছাত্রছাত্রীকে পানিবন্দি এলাকা থেকে নৌকায় চড়িয়ে বিদ্যালয়ে এনে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেন তিনি।
নৌকায় চড়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াতকারী কয়েক ছাত্রছাত্রী জানায়, তাদের অনেকের ঘর এখনও পানিবন্দি। আবার কারও ঘরে পানি না উঠলেও যাতায়াত করতে পারছে না। চারদিকে পানিতে সয়লাব হয়ে যাওয়া তারা ভেবেছিল হয়তো পরীক্ষা দেওয়া হবে না। কিন্তু সকালে নৌকা নিয়ে লোকজন এসে তাদের পারাপারের ব্যবস্থা করায় তারা পরীক্ষা দিতে পেরেছে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কলিম উল্লাহ জানান, দু'দফা বন্যায় বিদ্যালয়টির চারপাশ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। আশপাশের গ্রামগুলোও পানিবন্দি। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নিজ উদ্যোগে নৌকা দিয়ে যাতায়াতের সুযোগ করে দেওয়ায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে ছাত্রছাত্রীরা।
দক্ষিণ মিঠাছড়ি ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আবদুর রহিম জানান, পুরো বর্ষায় গ্রামটি পল্গাবিত হয়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই চাইল্ল্যাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য যাতায়াতের এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ না নিলে শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি হতো।
চাইল্ল্যাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আবুল কালাম আজাদ বলেন, এলাকাটা পানিবন্দি হয়ে পড়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। নৌকার ব্যবস্থা করে না দিলে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেত না। ফলে শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া জনপদের শিক্ষার্থীরা আরও পিছিয়ে পড়ত। তাই শিক্ষার্থীরা যাতে সময়মতো পরীক্ষা দিতে পারে এ লক্ষ্যে নিম্নাঞ্চলের পানিতে যাতায়াতের জন্য দুটি নৌকার ব্যবস্থা করেছি।
Blogger Comment
Facebook Comment