কক্সবাজার-টেকনাফ পর্যন্ত দীর্ঘ ১২০ কিলোমিটার সৈকতের ঝাউবন দিন দিন দখল হয়ে যাচ্ছে। নতুন ঘর তৈরি করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
এসব দখলদার বেশিরভাগই মিয়ানমার নাগরিক। কর্তৃপক্ষ এতদিন নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকলেও গত বুধবার সৈকত এলাকার অবৈধ দখলদারের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। এ অভিযানের প্রথম দিনে ৬-৭টি দোকান তুলে দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার-ইনানী-মোহাম্মদ শফির বিল-মনখালী দখলকৃত সৈকতের ঝাউবন এলাকায় অবৈধভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করতে অভিযান চালানো হলেও টেকনাফ সৈকত দখলকারীদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়নি কোনোদিন। ফলে সম্প্রতি সৈকত দখলদারদের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। তারা শুধু সৈকত দখল করে দীর্ঘ সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্য ও পরিবেশ বিনষ্ট করছে না, ঝাউবীথি কেটে উজাড় করছে। যে এলাকায় ঝাউবীথি কেটে ফেলা হয়েছে সে সৈকতের অনেক অংশ সাগরগর্ভে চলে গেছে। পরিবেশবিদ আবদুল মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, উপকূলীয় এলাকার জমি হলো সরকারের এবং গাছগুলো উপকূলীয় বন বিভাগের। পৃথক দুটি দফতরের সমন্বয়হীনতার ফলে সৈকতের জমি ও ঝাউবীথি রক্ষা করা যেত। রাজনীতিতে স্বার্থের বাইরে কেউ নয়।
দখলদাররা কোনো না কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় থেকে সৈকত দখল করছে প্রতিনিয়ত। আর প্রভাবশালীরা রাজনৈতিক নেতা। তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় অসংখ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে সাইন বোর্ড দিয়ে সৈকত দখল করা হচ্ছে। টেকনাফে বগদা হ্যাচারি, সোনারগাঁ হ্যাচারি, সোনার পাড়ায় সিমিজু হ্যাচারি, হোয়াইট গোল্ড হ্যাচারি ও বেঙ্গল হ্যাচারির নামে বিশাল আয়তনের সমুদ্রসৈকতের জমি দখল করে রাখা হয়েছে। এসব হ্যাচারির লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এসব জবর-দখল বলে স্বীকার করে না। তার মনে করে, সৈকতের ঝাউবীথি রক্ষা করছে। আবার অনেকে জানায়, ওই সব দখলদার প্রথমে সৈকতের ঝাউবীথির যত্ন নেওয়ার কথা বলে বেড়া দিয়ে পরে ঝাউগাছ উজাড় করে বিভিন্ন কায়দায় ইজারা নিয়ে সেখানে স্থাপনা গড়ে তুলছে। তা ছাড়া প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ভূমিহীন মানুষকে আশ্রয় দিয়ে সেখানে খড়ের ঘর করে দখল নিশ্চত করে। তারা বেশির ভাগই মিয়ানমার নাগরিক।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক জয়নুল বারী বলেন, অবৈধভাবে যারা দখল করেছে বিচ এলাকা তাদের ধারাবাহিকভাবে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। তিনি জানান, এ উচ্ছেদ অভিযানের কার্যক্রম কেবল শুরু হয়েছে। পুরো সৈকত এলাকা দখলমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এ কাজের ধারাবাহিকতা থাকবে।
Blogger Comment
Facebook Comment