সড়কে খানাখন্দ জনদুর্ভোগ চরমে

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার প্রধান দুই সড়কের (গোরকঘাটা-জনতাবাজার এবং গোরকঘাটা-শাপলাপুর ও ঘটিভাঙ্গা) ২৫ কিলোমিটার অংশের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুই মাস ধরে এ দুটি সড়কে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

গাড়ি পরিবর্তন করে যাতায়াত করতে গিয়ে মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে এ দুই সড়কের পাঁচটি ভাঙা স্থানে স্থানীয় উদ্যোগে বিকল্প সড়ক তৈরি করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনকে চাঁদা দিয়ে এসব বিকল্প সড়কে চলাচল করতে হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের শুকরিয়াপাড়া, হোয়ানক ইউনিয়নের পানিরছড়া, ধলঘাট পাড়া, রাজুয়ার ঘোনা, হরিয়াছড়া, জয়ের কাটা, ডেইল্যাপাড়া, কালারমারছড়া ইউনিয়নের অফিসপাড়া, আধারঘোনা, ইউনুছখালী উত্তর পাশে মাইজপাড়া, আফজলিয়াপাড়া, চালিয়াতলী ও শাপলাপুর ইউনিয়নের ষাইটমারা, জেমঘাটের দক্ষিণ এলাকা, বারিয়ার পাড়ায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সড়কের অবস্থা আরও করুণ হয়ে পড়েছে।
সূত্র জানায়, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন গোরকঘাটা-জনতাবাজার সড়কের ২৭ কিলোমিটারের মধ্যে ১৮ কিলোমিটার ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন গোরকঘাটা-শাপলাপুর ও ঘটিভাঙ্গা ৩১ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে সাত কিলোমিটার সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
চাঁদের গাড়ির চালক আবদুস শুক্কর বলেন, পানিরছড়া, রাজুয়ার ঘোনা, আফজলিয়াপাড়া ও চালিয়াতলীর দুটি স্থানে ভাঙা সড়কের পাশের বিকল্প সড়ক দিয়ে গাড়ি পার হওয়ার সময় সড়ক সংস্কারের অজুহাতে স্থানীয় লোকজন প্রতি গাড়ি থেকে ১০ থেকে ৩০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করছে। কেউ টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাঁর গাড়ি চলাচলে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন চাঁদা আদায়কারী বলেন, তাঁরা কষ্ট করে নিজেরা এ বিকল্প সড়ক তৈরি করেছেন। তাই গাড়ি পারাপারের সময় কিছু টাকা নিচ্ছেন। গাড়ি চলাচলে বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, লোকজন স্বেচ্ছায় টাকা দেন। কেউ না দিলেও তাঁরা গাড়ি চলাচলে বাধা দেন না।
কালারমারছড়া মিজ্জিরপাড়ার বাসিন্দা ওচমান গনি বলেন, বিকল্প যাতায়াতের কোনো উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে এ সড়ক দিয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, পাঁচটি স্থানে গাড়ি পরিবর্তন করে যাতায়াত করতে গিয়ে মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশল অফিসের সহকারী প্রকৌশলী গৌরাঙ্গ চন্দ্র বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন ৩১ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে সাত কিলোমিটার মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আর সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে যাওয়ার কারণে দুই মাস ধরে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ থাকায় স্থানীয় জনগণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।’ তিনি বলেন, আপাতত সড়কটি সংস্কারের জন্য ৮৫ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দ না পাওয়া পর্যন্ত সড়কগুলো সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, স্থায়ীভাবে সড়ক সংস্কার করতে আরও আট কোটি টাকা প্রয়োজন।
সড়কপথে চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রণজিৎ কুমার বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, বৃষ্টির সময় কয়েকটি স্থানে স্থানীয় লোকজন গাড়ি থেকে চাঁদা আদায় করলেও এখন তা বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন, এর পরও সড়কপথে কেউ চাঁদাবাজি করছে কি না, এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ২৭ কিলোমিটারের মধ্যে ১৮ কিলোমিটার সড়ক মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সড়ক সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রায় ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
Share on Google Plus

প্রতিবেদনটি পোষ্ট করেছেন: Unknown

a Bengali Online News Magazine by Selected News Article Combination.... একটি বাংলা নিউজ আর্টিকেলের আর্কাইভ তৈরীর চেষ্টায় আমাদের এই প্রচেষ্টা। বাছাইকৃত বাংলা নিউজ আর্টিকেলের সমন্বয়ে একটি অনলাইন নিউজ ম্যাগাজিন বা আর্কাইভ তৈরীর জন্য এই নিউজ ব্লগ। এর নিউজ বা আর্টিকেল অনলাইন Sources থেকে সংগ্রহকরে Google Blogger এর Blogspotএ জমা করা একটি সামগ্রিক সংগ্রহশালা বা আর্কাইভ। এটি অনলাইন Sources এর উপর নির্ভরশীল।
    Blogger Comment
    Facebook Comment