মহেশখালীর সমুদ্র উপকূল থেকে নিষিদ্ধ চর জাল, বেহুন্দি জাল এবং কুম জাল দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে ছোট চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অপরিণত পোনা মাছ অতিমাত্রায় আহরণের ফলে এ অঞ্চলের সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে উপনীত।
সামুদ্রিক মৎস্য আইন ১৯৮৩-এর ১৪ ধারায় বেহুন্দি জালের মেলাংয়ের ফাঁসের আকার সর্বনিম্ন ৩০ মিমি. থেকে ২০০৪ সালে এক সংশোধনীর মাধ্যমে ফাঁসের আকার সর্বনিম্ন ৪৫ মিমি. করা হয়। এই আইন বাস্তবায়নে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই বলেই বর্তমানে মোহনা বেহুন্দি জাল, চর জালের মেলাংয়ের ফাঁসের আকার মাত্র ৩-৪ মিমি। শুধু সাগর বেহুন্দি জালের মেলাংয়ের ফাঁস সর্বোচ্চ ৩০ মিমি. পর্যন্ত দেখা গেছে।
মৎস্য আইনে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ মাটির সঙ্গে স্থায়ীভাবে সংযুক্ত চর জালের দৈর্ঘ্য ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০০ মি. পর্যন্ত হয়ে থাকে। ভাটার সর্বনিম্ন সীমায় শত শত খুঁটির সাহায্যে ৮-১২ ফুট উচ্চতার এই জাল অনেকটা ক্রিসেন্ট আকৃতির করে নিম্ন প্রান্ত মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। জালের মাঝ বরাবর ৩-৪ মিমি. ফাঁসের একটি মেলাং বা থলে যুক্ত করে দেওয়া হয়। পুঁতে রাখা চর জাল থেকে সর্বোচ্চ ২ কিমি. ভেতর পর্যন্ত জোয়ার হয়। জোয়ারের সময় নৌকার সাহায্যে গিয়ে জালের ওপরের প্রান্ত খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। ভাটার সময় আসা ছোট-বড় সব ধরনের মাছ এবং পোনা আর সাগরে ফিরে যেতে পারে না। জাল এবং মেলাংয়ে আটকা পড়ে। এভাবে প্রতিদিন ২ বার সামুদ্রিক মৎস্য প্রজাতি ধ্বংস করা হচ্ছে। অন্যদিকে প্রতি বছর সামুদ্রিক কাছিমের ডিম পাড়া মৌসুমে ডিম পাড়তে এসে ফিরে যাওয়ার সময় চর জাল ও বেহুন্দি জালে আটকা পড়ে ব্যাপকহারে সামুদ্রিক কাছিমের মৃত্যু হয়। বাংলাদেশে এভাবে প্রতিদিন ১২ হাজার মোহনার বেহুন্দি জাল এবং ৫ হাজার সাগর বেহুন্দি জাল দিয়ে মৎস্য সম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে। কিন্তু মৎস্য আইনে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ চর জালের কোনো পরিসংখ্যান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় মহেশখালী মৎস্য অফিসে নেই। অথচ মহেশখালী উপকূলে বহুসংখ্যক চর জাল পাতা হয়েছে। এদিকে ইঞ্জিনচালিত বোটে ৩-৪ মিমি. ফাঁসের কুম জাল দিয়ে ব্যাপক হারে অপরিণত পোনা মাছ আহরণ করা হচ্ছে। অন্যদিকে উপকূলীয় এলাকায় দিন দিন প্যারাবন বা ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল কেটে ধ্বংস করায় বিভিন্ন প্রকার মৎস্য প্রজাতির ক্ষুদ্র পোনা এবং অপরিণত মাছের লালনভূমি ধ্বংস করায় বঙ্গোপসাগরে আশঙ্কাজনক হারে মৎস্যসম্পদ হ্রাস পেয়েছে। উপকূলের কাছাকাছি অগভীর সমুদ্র থেকে অপরিকল্পিতভাবে অপরিণত পোনা মাছে বিচরণক্ষেত্র থেকে প্রতিদিন অবৈধ চর জাল, বেহুন্দি জাল ও কুম জাল দিয়ে নির্বিচারে অতিমাত্রায় অসংখ্য প্রজাতির অপরিণত পোনা মাছ আহরণ করে মৎস্যসম্পদ ধ্বংস করে যাচ্ছে।
জেলে মনজুর আলম জানান, ৩০-৪০ বছর আগে যখন আমরা সাগরে বোট নিয়ে মাছ ধরতে যেতাম তখন জালের প্রস্থ ছিল মাত্র ০৮-১০ হাত এবং প্রতিদিন সাগর থেকে ফিশিং করে কূলে চলে আসতাম। তখন বরফও ছিল না, এখন বরফ নিয়ে সাগরে ১০-১৫ দিনের জন্য মাছ ধরতে যায়। জালের প্রস্থও ৪০-৮০ হাত। ইউএনও এটিএম কাউছার হোসেন বলেন, দ্রুত চর জাল ও বেহুন্দি জাল উচ্ছেদে অভিযান চালানো হবে।
জেলে মনজুর আলম জানান, ৩০-৪০ বছর আগে যখন আমরা সাগরে বোট নিয়ে মাছ ধরতে যেতাম তখন জালের প্রস্থ ছিল মাত্র ০৮-১০ হাত এবং প্রতিদিন সাগর থেকে ফিশিং করে কূলে চলে আসতাম। তখন বরফও ছিল না, এখন বরফ নিয়ে সাগরে ১০-১৫ দিনের জন্য মাছ ধরতে যায়। জালের প্রস্থও ৪০-৮০ হাত। ইউএনও এটিএম কাউছার হোসেন বলেন, দ্রুত চর জাল ও বেহুন্দি জাল উচ্ছেদে অভিযান চালানো হবে।
Blogger Comment
Facebook Comment